বাঁচতে গেলে শুনতে হবে,
লকডাউনে ভূতের রানির
হল বিষম দায়,
নেইকো নাপিত, নেই পার্লার,
করেন কী উপায়?
অনেক ভেবে ভূতের রানি
বাছেন নতুন ছাঁট,
প্রেতের দেশে চালু হল
ন্যাড়া হেয়ারকাট।
ন্যাড়া মাথায় কবিতারা
ভসভসিয়ে ওঠে,
ছন্দরা সব এদিক ওদিক
ছটফটিয়ে ছোটে।
আগে ছিলেন রবি কবি
এখন আছেন ন্যাড়া,
পেত্নি বলেন, লাইক কেন
দিস না হতচ্ছাড়া?
হাড় চিবোব, মাস চিবোব,
মটকে দেব ঘাড়,
পদ্যেতে মোর লাইক যদি
না পাই হাজারবার।
কাঁহাতক আর সময় কাটান
সন্ধে হওয়ার আগে থেকেই
দাঁত খিঁচিয়ে পেত্নি রানি
এই কটা মাস আগেও মানুষ
পেত্নি রানির থেকেও কিনা
ফেসবুকেতে লিখলে ছড়া
ভার্চুয়ালে রিয়াল লাইফ
ভূত রাজাতেও মন ওঠে না
পেত্নি রানি রোমান্স খোঁজেন
অল্পেতে খুশি হবে কোভিড উনিশ কি?
মাথা না মুড়ানো কি হবে খুব রিস্কি?
নিউটাউনের সেই ন্যানো গেটটুগেদার,
সেকেন্ড ওয়েভ সে এনেছিল করোনার?
এই ভেবে যদি থাকি বেঁধে দড়ি উদরে
তাহলে করোনা কি পালাবে এ দেশ ছেড়ে?
তার চেয়ে পরি মাস্ক, মাখি স্যানিটাইজার,
সময়েতে নিয়ে নিই ভ্যাক্সিন দুইবার।
মেদিনিপুরেতে কি যাব নাকো আমরা?
মনে পড়ে কোলাঘাটে হোটেলের কামরা?
ইলিশ হুইস্কির সেই অ্যাডমিক্সচার
আশা রাখি ফিরে সেতো আসবেই বারবার।
ওয়েভ সেকেন্ড থার্ড যাই থাক কপালে,
দেখা হবে সকলের একদিন সকালে।
ততদিন ডিসট্যান্স রাখি ফুট ছয় সাত,
দূরে থাকি, মনে তবু রই যেন একসাথ।
ভৃঙ্গি বলে, 'নন্দী দাদা করো মোদের ত্রাণ,
পেত্নী রানি আসছে আবার ভোলাবাবার থান।
হাওড়া থেকে ট্রেনে চেপে নামলো হরিদ্বার।
সেখান থেকে কয় পা বলো বদ্রি কি কেদার?
ভোলাবাবা ভোলা মনের নাইকো নজর হেথা,
পেত্নী রানির হুকুম মেনে গাত্রে হবে ব্যাথা।
আগের বারে, দুখের কথা বলব কাকে আর,
শরীর আমার হয়েছিল হাড় কখানা সার।
একা আমি নয়কো, যত বাবার অনুচর
সবে মিলে খেটে কত রাত করেছি ভোর!'
শিং নাড়িয়ে নন্দী বলে, 'তিনপাওলা বোকা,
না পড়লে নিউজপেপার মিথ্যে কেন রাখা?
রানির খবর আছে জুড়ে সেটার প্রথম পাতা।
পুলিশ তাকে দিয়েছে ফের ফিরিয়ে কলকাতা।'
* * *
প্রেতিনি রানিরে পুলিশ ছল করে
ফিরায়ে দিয়াছে কলকাতা,
নতুবা তাহারে হিমাদ্রি পাহাড়ে
রুধিবে কার হেন ক্ষমতা?
কৈলাস সে ভূধর অতীব মনোহর,
কোটি শশী সেথা পরকাশ।
তা বলে নয় হেন নীলকণ্ঠ যেন
করেন সেথা সদা নিবাস।।
সুদীর্ঘ হিমালয় পশ্চিমে কাশ্মীর রয়
পূরবে আছে অরুণাচল।
অপূর্ব হেরি শোভা মুনি মনোলোভা
সকলি দেব নিবাসস্থল।।
অতীত যুগে কবে কুমারসম্ভবে
ছন্দে এঁকে দিয়ে ছবি,
পর্বত হিমালয় শিবের শ্বশুরালয়
কাব্যে লিখেছেন কবি।।
শহর দার্জিলিং হিলস্টেশন কিং
নাই থাক পুরাণে নাম,
বঙ্গে পূজা সেরে উমা সপরিবারে
সেথায় লহেন বিশ্রাম।।
ঘুম স্টেশন হতে কাঞ্চনজঙ্ঘাতে
দেখিলে সূর্যের উদয়,
জুড়ায় আঁখিদুটি উদ্বেগ যায় ছুটি
শান্ত তাপিত হৃদয়।।
সেথায় মিলিবারে ভোলা মহেশ্বরে
রানি বাহিরান পথে।
লইয়া দলবলে চড়ে ইন্ডিয়ান রেলে
চলেন হিমাদ্রি পর্বতে।।
কাঁদিয়া গৌতম গোভূতের অধম
ভাসিয়া কহে আঁখিনীরে,
নেক্সট বার হতে ট্যুর প্ল্যান করিতে
চিত্তে রেখো এ দাসেরে ।।
No comments:
Post a Comment